Don't make your character "চরিত্র-হীন"
- Rashef Mahbub
- Nov 21, 2022
- 3 min read
রাইটিং-এ “ক্যারেকটার ডেভলপমেন্ট” এর বিভিন্ন টেকনিক নিয়ে ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করছিলাম। বেশ কিছু ইন্টারেস্টিং আইডিয়া চোখে পড়ল তাই মনে হল ফেলো রাইটার এবং রিডারদের সাথে শেয়ার করি। এর বাইরে প্রচলিত বা টিপিকাল আইডিয়াগুলো আমরা বেশিরভাগ কমবেশি জানি, তাই সেগুলো এই লেখায় টানছি না। নিচের (**) দেয়া পার্টটুকু মূলত পার্সোনাল একটা অবজার্ভেশান। চাইলে সরাসরি এরপরের পয়েন্ট আকারে লেখা পার্টে চলে যেতে পারেন।
**আমার দেখা বেশিরভাগ বর্তমান রাইটারদের জার্নিটা শুরু হয় ছোট গল্প লিখতে লিখতে। সেটা থ্রিলার রাইটারদের ক্ষেত্রে বোধহয় আরেকটু বেশি সত্য। তাই বেশ কিছু সংখ্যক ছোটগল্প কিছুটা সাক্সেসের সাথে লেখে ফেলার পর আমরা যখন প্রথম নিজেদের অনুমতি দেই কিছুটা বড় পরিসরে, অর্থাৎ উপন্যাস লেখার যাত্রা শুরু করার, আমাদের একটা প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় খুব বেশি প্লট নির্ভর বা গল্প ড্রিভেন রাইটিং। একটু ভেঙ্গে বলি। ছোট গল্প গুলা সাধারণত এক থেকে তিন হাজার শব্দের হয়ে থাকে। এখানে রাইটারদের মেইন এইমই থাকে খুব পরিমিত পরিসরে সাস্পেন্স বজায় রেখে গল্পটা বলে ফেলা। এই সীমিত কাগুজে জমিনে “ক্যারেক্টার ডেভলপমেন্ট” ব্যপারটা নিয়ে কেউ তেমন মাথাই ঘামান না কারণ সেটা নেয়ার টু ইম্পসিবল আসলে। কিন্তু সমস্যা হয় আমরা যখন উপন্যাসের বিশাল পরিসরে প্রবেশ করি। মোটামুটি পনের হাজার শব্দের নভেলা থেকে শুরু করে সত্তর হাজার শব্দের বেশ বড় উপন্যাস, এগুলোতে ক্যারেকটার ডেভলপমেন্টের বিশাল সুযোগ (এবং অনেকাংশে প্রয়োজনীয়তা) রয়েছে। কিন্তু যেহেতু আমরা ছোট গল্প থেকে ট্রান্সিশান করি, প্রথম প্রথম এট লিস্ট আমাদের ক্যারেকটারগুলো শুধু “যা করা প্রয়োজন” তা করে চলে যায়। খুন করা বা লাশ লুকোনোর পাশাপাশি এরা হয়তো সিগারেট, মদ খায় বা কিছু ক্যুল কাজ করে, ওয়ানাবি ডায়লগ দেয়, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের ক্যারেকটারের ডেপথ্ থাকে না। পাঠক খুব ভালমত তাদের একটা ছবি নিজের মানসপটে গড়ে তুলতে পারে না। সোজা বাংলায়, প্লট খুব আকর্ষণীয় হলেও চরিত্রগুলো খুব ফ্ল্যাট হয়ে যায়। তাই ভাল রাইটার হতে গেলে এই জিনিসটাতে ইম্পর্ট্যান্স দেওয়া আসলে বাধ্যতামূলকই বলা চলে। এবার মূল পয়েন্টে চলে যাই।
১/ এই আইডিয়াটা এখন পর্যন্ত পড়া সবচে’ ইউনিক। কেউ কেউ উপন্যাস/স্ক্রিপ্ট লেখার সময় ক্যারেক্টারগুলোর আলাদা আলাদা ফেবারিট সং এর প্লে লিস্ট তৈরি করেন। কে কেমন মিউজিক পছন্দ করে, এটা অনেক সময় তার ক্যারেক্টার সম্পর্কে একটা ভাল আইডিয়া গড়ে দেয়। তাই কিছু চরিত্রের পছন্দের প্লে লিস্টে থাকে হেভি মেটাল, কারো কান্ট্রি মিউজিক আবার কারো বা সিমপ্লি স্লো লেইড ব্যাক মেলোডিয়াস গান।
২/ MBTI বা মায়ার্স ব্রিগ্স টাইপ ইনডিকেটর মানুষের পার্সোনালিটি টাইপ বিচারের বহুল প্রচলিত একটা টেস্ট। এই টেস্টে নানান ধরণের প্রশ্ন থাকে, প্রশ্নগুলো আপনি কি এটা পছন্দ করেন নাকি ওটা, এই পরিস্থিতিতে আপনি নিচের কোনটি করতেন টাইপের। এরকম অনেকগুলো প্রশ্নের উত্তরের ভিত্তিতে একটা পার্সোনালিটি টাইপ ডিফাইন করা হয়। ইন্টারেস্টিংলি, অনেক রাইটার তাদের মেইন চরিত্রগুলোকে প্রথমে এই MBTI টেস্টের ভেতর দিয়ে নিয়ে যান। এরপর যেই ছাঁচ দাঁড়ায়, গল্পে ক্যারেকটারগুলো সেইভাবেই ডানা মেলে বা খাঁচায় বন্দী থাকে।
৩/ মেনারিজম, মুদ্রাদোষ ইত্যাদি হ্যাবিচুয়াল ট্রেইট্স আমরা যুগে যুগে উপন্যাস বা সিনেমায় আমাদের পছন্দের বা অপছন্দের ক্যারেক্টারদের মধ্যে অনেক দেখেছি। কিশোর পাশার নিচের ঠোঁটে চিমটি কাটা, মুসা আমানের খাইসে বলা, খাবারের প্রতি প্রচণ্ড আকর্ষণ কিংবা বাংলা সিনেমার ফাউল ভিলেনদের একটা স্পেসিফিক ডায়ালগ মুভিজুড়ে ভাঁড়ের মত বলে যাওয়া, এ সমস্তই তার উদাহরণ। অনেকে লেখার সময় ক্যারেকটারগুলোর এই মেনারিজম গুলো আগে সেট করে। কেউ রেগে গেলে কিছু চুল কেটে ফেলে, কেউ আবার ঠাণ্ডা পানিতে মাথা চুবিয়ে রাখে। অনেক ক্ষেত্রে আবার এইসব আপাত তুচ্ছ হ্যাবিচুয়াল ট্রেইট্স গল্পের প্লটেও বিশাল ভূমিকা রাখে।
৪/ চরিত্রগুলোর পাস্ট স্টোরি বা ব্যাকগ্রাউন্ড আগে লিখে ফেলা আরেকটা জনপ্রিয় টেকনিক অনেকের কাছেই। প্রটাগনিস্টের বাড়ির সবাই ছোটবেলায় বাড়িতে আগুনে পুড়ে মারা যায়, বা তার খুব কাছের কেউ পানিতে ডুবে যায়, হয়তো তারই ভুলে, অথবা হয়তো সে তার খুব কাছের কোন আত্মীয়ের দ্বারা ছোটবেলায় মলেস্টেড হয়েছে নিয়মিত; এই ধরণের ব্যাক স্টোরি আগে থেকে সেট করে দিয়ে অনেক রাইটার তার চরিত্রগুলোর “Who you are now” ডিসাইড করেন। সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারলে এই ব্যাকস্টোরি গুলো গল্পে চমৎকার ডায়নামিক্স যোগ করে। আপাতত পার্সন অফ ইন্টারেস্ট, পাতাললোক, ব্রেকিং ব্যাড, বেটার কল সলের অনেকগুলো এমন দৃশ্যের কথা মনে পড়ছে।
৫/ “গল্পের চরিত্রগুলোকে নিজের বন্ধু মনে করে দেখো। তোমার আশেপাশের কোন্ ফ্রেন্ডকে তোমার বেশি ভাল লাগে এবং কেন, এমন ফ্রেন্ডরা যাদের তুমি অনেক পছন্দ করলেও বেশ কিছু বাজে ক্যারেকটার ট্রেইটের কারণে মাঝে মাঝেই বিরক্ত লাগে, সেগুলা কি কি, এগুলো তোমার গল্পের ক্যারেকটারেও যাতে থাকে।” - এই সাজেশান অনেকের কাছে ক্লিশে লাগলেও আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে খুবই ভাল সাজেশান মনে হয়। মানিক বন্দোপাধ্যায়ের সেই এত্ত বছর আগে লেখা সম্পূর্ণ গ্রামীণ প্রেক্ষাপটের কোন গল্পের ক্যারেকটারের সাথেও আমরা রিলেট করে ফেলতে পারি কারণ সেই ক্যারেকটারগুলোর অনেকের ট্রেইট, তাদের লোভ, চাওয়া, জিঘাংসা বা ভালবাসা, এগুলো আমরা আমাদের আশেপাশের মানুষের মাঝেই হরদম দেখতে পাই। সোজা কথা, এই জিনিসটা ভালমত করতে পারলে গল্পের চরিত্রগুলো অনেক বেশি “হিউম্যান” হয়ে ওঠে।
আরো অনেক কিছু লেখার মত আছে, তবে সোস্যাল মিডিয়ায় মানুষের এটেনশান স্প্যান বা আমার নিজের সময়, দু’টো বিবেচনা করেই লেখা আর বড় করতে চাচ্ছি না। এর বাইরে সবচে ক্লিশে কিন্তু নেসেসারি যেই টেকনিক, সেটা হচ্ছে গল্পের মূল চরিত্রগুলোর ডিসায়ার, মোটিভ, স্ট্রেন্থ, উইকনেস, নিড এবং জাস্টিফিকেশান জানা এবং সে অনুযায়ী প্লট ড্রাইভ করা। গ্রুপের লেখক ভাই/আপুরা সময় পেলে আপনাদের একান্ত নিজেদের কোন টেকনিক শেয়ার করতে পারেন এবং এভিড রিডাররাও যদি কোন গল্প পড়তে যেয়ে, মুভি দেখতে যেয়ে চমৎকার কিছু লক্ষ্য করে থাকেন এই বিষয়ে, প্লিজ শেয়ার করবেন। হ্যাপি রাইটিং এন্ড রিডিং!
Comments